আগেই শুনেছিলাম যে আমেরিকায় প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টিবায়োটিক পাওয়া যায় না, তাই এখানে আসার সময় দুই ডোজের এন্টিবায়োটিক সাথে করে কিনে এনেছিলাম। আগের বারে দেওয়া ডাক্তার এর দেওয়া প্রেসক্রিপশন দিয়েই কিনিছিলাম। সেই প্রেসক্রিপশন ছিল টনসিল ইনফেকশন এর জন্য। দেশে থাকতে দুই তিন মাসে একবার এন্টিবায়োটিক খাওয়া ছিল রুটিন মাফিক কাজ।
যাই হোক, এখানে এসে যখন আবার আমার টনসিল ইনফেকশন হলো, তখন সাথে করে আনা ঔষধের বাক্স খুলে দেখি এন্টিবায়োটিক গুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে ডাক্তার এর কাছে যেতে হলো। ডাক্তার এর প্রেসক্রিপশন পড়ে দেখি ডাক্তার কোনো এন্টিবায়োটিক দেয় নাই। কি একটা নেজাল ড্রপ দিল আর বললো যে লবন পানির নেজাল রিঞ্জ নিতে (এটা একধরনের প্লাস্টিক বোতলে হালকা গরম পানির মধ্যে মেডিকেল গ্রেড এর সোডিয়াম ক্লোরাইড মিশিয়ে বানাতে হয়)। নেজাল ড্রপ ব্যবহার করলাম এক মাসের মত। আর নেজাল রিঞ্জ ব্যবহার করেছি বেশ অনেক দিন। এই ঘটনাটা প্রায় নয় বছর আগের কথা। আলহামদুলিল্লাহ, এই নয় বছরে একবারও টনসিল ইনফেকশন এর জন্য এন্টিবায়োটিক খেতে হয় নাই। একই ঘটনা বাচ্চাদেরকে নিয়েও দেখেছি। দুই বছরের নিচের বাচ্চাদের কে এন্টিবায়োটিক দুরের কথা, একটা কাশির ঔষধও দেয় না। যদি না হাসপাতাল এ যাওয়ার মত অবস্থা না হয়। যেকোনো জ্বর হলে তিন দিনের আগে ডাক্তার এর এপয়েন্টমেন্ট ও দিতে চায় না। আর ডাক্তার এর কাছে যাওয়ার পরেও বেশির ভাগ সময়ই এই একটা কথায় বলে - "বেশি করে লিকুইড খাওয়াও"।
এই কথা গুলো মনে পড়ল প্রথম আলোর এই খবরটা পড়ে। আমাদের দেশে আমরা নিজেদেরকে এত বুদ্ধিমান ভাবি যে ভাইরাল জ্বর হলেও আমরা সোজা ফার্মাসী তে গিয়ে এন্টিবায়োটিক কিনে খাওয়া শুরু করে দেই। একবার চিন্তা করেও দেখি না যা এন্টিবায়োটিক হলো ব্যাকটেরিয়া মারার ঔষুধ, ভাইরাস এর সাথে এর কোনো লেনাদেন নাই। যাই হোক, আমাদের সবার উচিত ঔষধ সম্মন্ধে আরও একটু সচেতন হওয়া। ঔষধ যখন খেতেই হবে তখনই শুধু ঔষধ খাওয়া। যখন ইচ্ছা আর যা ইচ্ছা তাই ঔষধ নয়।
No comments:
Post a Comment