মৃত্যু উপত্যকায় হেঁটে চলেছি আমি
জীবনের খোঁজে!
হীরা মানিক জহরতের প্রত্যাশী আমি
হাতরে বেড়াচ্ছি সব ঝলসানো কাঁচ!
নরম দূর্বা ঘাস দিয়ে বানিয়ে চলছি
চির আরামের ফোলানো ফাঁপানো জাজিমের বিছানা
লতানো গাছের গুঁড়ি ফেলে উন্মত্তের মতো অবরোধ করে চলেছি
অবধারিত গন্তব্যের পথ- তৈরি করি সুরক্ষিত ব্যারিকেড।
এই আশায়,
যদিবা গতিরোধ করা যায় জীবনের যাত্রাপথের!
বাড়িয়ে তোলা যায় যদি আমার এই বিলাসী জীবনের দৈর্ঘ্য।
অনন্তর মাপজোক করে দেখি আরেকটু এগোলাম কিনা!
পাশের জনের থেকে পিছিয়ে পড়ার এক অদ্ভুত ভয়ে।
আরেকটু এগোতে পারলেই যেন পৌঁছে যাবো মরিচিকাময় মরুদ্যানে-
মরুভূমির তপ্ত বালি পেছনে ফেলে!
সেই টানে - দৌড়ে হেঁচড়ে ছুটে চলেছি এই নশ্বর দেহটাকে
এতটুকু অবকাশ না দিয়ে।
প্রতি বছর খুলে চলছি নতুন নতুন হালখাতার
জমাখরচের পুরনো খতিয়ান অসম্পূর্ণ রেখেই।
বিনিয়োগ বাড়িয়েই চলছি জীবনের চাওয়া না-চাওয়ার খাতগুলোতে
উন্নয়নের-অপচয়ের বাজেট ঘাটতির বাছবিচার না করেই।
পাওয়া না-পাওয়ার প্রতিনিয়ত হিসেবে হার মানিয়ছি হিসাববিজ্ঞানের ঝানু কেরানিকেও
তারপরও ব্যতিব্যস্ত থাকি হিস্টরিয়া রোগীর মতো-
একটা কিছু না পাওয়ার অবাধ্য আকাঙ্ক্ষায়!
কাকে কী দিয়ে দিলাম, কে কী নিয়ে গেলো আর কীইবা রেখে যাবো
এই ভাবনায় সারাদিন অশান্ত এই মন।
কী নিয়ে এসেছিলাম কী নিয়ে যাবো
সেই চিন্তা করার ফুরসত কই?
ফজরের প্রত্যুষ উদ্ভাসিত আলোয় প্রতারিত হয়ে ভূলে থাকি গোধূলির লালিমা
সূর্যাস্তক্ষনে জেগে উঠে খুঁজি আলোর রসদ
অন্ধকারের বাস্তবতায় আলোকিত হয়ে মুছে ফেলি সব সন্দেহ - অবিশ্বাসের জবানবন্দী।
ক্ষনিকের ওই বিলাসী উদ্দাম জীবন তখন মনে হয় এক আজন্ম শত্রু
ফিরে যেতে চাই শোধরাবো বলে - ঘুরে দাঁড়াতেই আটকে যাই আমারই তৈরি করা ব্যারিকেডে!
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে হারিয়ে যাই অন্ধকারের অতল গহ্বরে!
ভয়ার্ত আমি ভাবি-"খুব দেরি হয়ে গেল নাকি?"
No comments:
Post a Comment